ধর্ম

ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ বিস্তারিত

মোহাম্মদ বাইতুল্লাহ। ঢাকাপোস্ট ডট নেট।


জাতিভেদ বা বর্ণবাদ কী?

ধরেন , আমাদের সমাজে কিছু লোক আছে , যারা মনে করে তারা অন্য কারো থেকে একটু বেশি ‘স্পেশাল’? মানে, তাদের জন্ম যেখানে হয়েছে, যে পরিবারে তারা জন্মেছে, অথবা তাদের গায়ের রঙ বা ধর্ম যেমনই হোক না কেন, এগুলোর ওপর ভিত্তি করে তারা নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে উঁচু ভাবে। আর বাকিদের, যারা তাদের থেকে ‘আলাদা’, তাদের ভাবে নিচু। এই যে ভেদাভেদ করা, এই যে বৈষম্য করা, এটাই হলো জাতিভেদ বা বর্ণবাদ

ব্যাপারটা অনেকটা এমন, ধরেন ক্রিকেট খেলার মাঠে আপনি একজন ভালো খেলোয়াড়, কিন্তু অন্য একজন শুধু তার গায়ের রঙের জন্য বা তার পূর্বপুরুষ কী কাজ করত, তার জন্য তাকে খেলতে দিতে চাইছে না বা মাঠে ঢুকতে দিচ্ছে না। এটা কি ঠিক? মোটেও না!

সহজ কথায়, কেউ যদি তার জন্ম, বংশ, গায়ের রঙ, বা ধর্মের কারণে অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা মনে করে এবং অন্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বা তাদের অধিকার কেড়ে নেয়, সেটাই জাতিভেদ বা বর্ণবাদ। এটা সমাজে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আর কেউই চায় না এমন কিছু হোক, তাই না?

সবার আগে কোরআনে বর্ণিত সূরা হুজরাতের ১৩ নম্বর আয়াত একটু ব্যাখ্যা করা দরকার

সূরা হুজরাতের ১৩ নম্বর আয়াত, এই আয়াতটা তো এক কথায় অসাধারণ। চলেন, ব্যাখ্যা করি।


সূরা হুজরাতের ১৩ নম্বর আয়াত

প্রথমে আয়াতটা দেখেন, আরবি এবং বাংলা অর্থসহ:

আরবি:

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

বাংলা অর্থ:

“হে মানবজাতি! আমরা তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি, আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, যে সবচেয়ে বেশি মুত্তাকী। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।”


ব্যাখ্যা

দেখেন , আল্লাহ তা’আলা এখানে কী চমৎকার কথা বলেছেন! শুরুতেই বলছেন, “হে মানবজাতি!” মানে, দুনিয়ার সব মানুষ, ধনী-গরিব, সাদা-কালো, যেই হোক না কেন, সবাইকে একসাথে ডাকছেন। এটা থেকেই বোঝা যায়, ইসলামে কোনো ভেদাভেদ নেই।

তারপর বলছেন, “আমরা তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি…” মানে কী বুঝলেন? আদম (আঃ) আর হাওয়া (আঃ) থেকে! আমরা সবাই তো এক বাপ-মায়ের সন্তান, তাই না? তাহলে কিসের এত অহংকার? কিসের এত ভেদাভেদ? যখন সবাই এক বাপ-মায়ের থেকে এসেছি, তখন একজন আরেকজনের ওপর শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করে কীভাবে? চিন্তা করেন!

এরপর দেখেন, দারুণ একটা কথা: “…আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো।” ওহ, এই জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ! আল্লাহ কেন আমাদের আলাদা আলাদা জাতি আর গোত্রে ভাগ করলেন? ঝগড়া করার জন্য? মারামারি করার জন্য? একদম না! তিনি বলেছেন, ‘লিতা’আরাফু’ – মানে, যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পারো! ধরেন, আপনার একটা বিশাল পরিবার আছে। কে আপনার চাচাতো ভাই, কে মামাতো ভাই, কে ফুফাতো বোন – এটা চেনার জন্যই তো একটা সিস্টেম লাগে, তাই না? তেমনি, মানুষ হিসেবে কে কোন অঞ্চলে থাকে, কার কী সংস্কৃতি, সেটা জানার জন্য এই ভাগ করা হয়েছে। এটা কিন্তু ভেদাভেদ করার জন্য না, বরং পরিচয় জানার জন্য, সম্পর্ক তৈরির জন্য, সহযোগিতা করার জন্য! ভিন্ন ভিন্ন জাতির মানুষ একসাথে মিশে যদি একে অপরকে জানতে পারে, তাহলে সমাজের সৌন্দর্য আরও বাড়ে।

আর আসল কথাটা তো এর পরেই! “নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, যে সবচেয়ে বেশি মুত্তাকী।” কী সুন্দর কথা! আমাদের সমাজে আমরা কী খুঁজি? কে কত ধনী, কে কত ক্ষমতাশালী, কার গায়ের রঙ কতটা ফর্সা, সে কোন বংশের। কিন্তু আল্লাহ বলছেন, তাঁর কাছে এসবের কোনো দাম নেই। তাঁর কাছে দাম আছে তাকওয়ার! তাকওয়া মানে কী? মানে হলো, আল্লাহকে ভয় করে চলা, তাঁর নির্দেশ মেনে চলা, খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকা। যে মানুষটা আল্লাহর পথে চলে, নেক কাজ করে, তাঁর মনটা পরিষ্কার – সে-ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে সম্মানিত! সে যেই হোক না কেন, রিকশাচালক হোক বা রাজা হোক, আল্লাহর কাছে সে-ই সেরা যার তাকওয়া বেশি।

শেষে বলছেন, “নিশ্চেজ আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।” মানে, আল্লাহ সব জানেন, সব দেখেন। কে মনে মনে কী ভাবছে, কে ভালো কাজ করছে, কে মন্দ কাজ করছে, সবকিছু তাঁর জানা। সুতরাং, তিনি যখন বলছেন তাকওয়া সবচেয়ে বড় জিনিস, তার মানে তিনি জেনেশুনেই বলছেন। তিনি কারো সাথে অবিচার করেন না।

এমন প্রশংসাযোগ্য কিছু হাদিসও পাওয়া যায়

চলুন এবার হাদিস গুলো দেখা যাক:

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১২। জানাযাহ সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ ১০. বিলাপ করে কান্নাকাটি করার ব্যাপারে হুশিয়ারী
২০৪৯-(২৯/৯৩৪) আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বাহ, ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) (শব্দাবলী তার) ….. আবূ মালিক আল আশ’আর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার উন্মাতের মধ্যে জাহিলী যুগের চারটি কু-প্রথা রয়ে গেছে যা লোকেরা পরিত্যাগ করতে চাইবে না। (১) বংশের গৌরব, (২) অন্যকে বংশের খোটা দেয়া, (৩) নক্ষত্রের মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা, (৪) মৃতের জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি করা। তিনি আরও বলেন, বিলাপকারী যদি মৃত্যুর পূর্বে তওবা না করে তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে এভাবে উঠানো হবে যে, তার গায়ে আলকাতরার (চাদর) খসখসে চামড়ার ওড়না থাকবে। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ২০২৮, ইসলামীক সেন্টার ২০৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মালিক আল আশ্‘আরী (রাঃ)


নবী মুহাম্মদ বলেছিলেন, “হে লোকজন! সাবধান তোমাদের আল্লাহ একজন। কোন অনারবের ওপর কোন আরবের ও কোন আরবের ওপর কোন অনারবের কোন কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের ও কোন শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণঙ্গের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই আল্লাহভীতি ছাড়া। তোমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহভীরু সেই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাবান। আমি কি তোমাদেরকে পৌঁছিয়েছি? তারা বলল, আল্লাহর রাসূল পৌঁছিয়েছেন। তিনি বললেন, তাহলে যারা এখানে উপস্থিত আছে তারা যেন অনুপস্থিত লোকদের কাছে এ বাণী পৌছিয়ে দেয়।” (মুসনাদে আহমাদ: ৫/৪১১)


ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ
ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ

কিন্তু শুধুমাত্র এই হাদিস গুলো দ্বারা আমরা বিচার করতে পারি না। কারণ আরও বহু হাদিস রয়েছে যেগুলো মানুষে-মানুষে, গোত্রে-গোত্রে এবং বংশে বংশে পার্থক্য তৈরি করে। যা ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদের বিষয়টি সামনে আনে,

এবার চলুন এক নজরে এই হাদিস গুলো দেখে নিই:

কুরাইশ বংশ ছাড়া আর কোন বংশের আনুগত্য করা যাবে না:


সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৪/ রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রশাসন
পরিচ্ছেদঃ ১. জনগন কুরায়শ এর অনুগামী এবং খিলাফত কুরায়শ এর জন্য
৪৫৫০। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ, যুহায়র ইবনু হারব ও আমর আন নাকিদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “জনগণ এর বিষয়ে (প্রশাসনিক ব্যাপারে) কুরায়শদের অনুসারী। মুসলিমরা তাদের মুসলিমদের এবং কাফেররা তাঁদের কাফেরদের (অনুসারী)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)


সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৩৪। প্রশাসন ও নেতৃত্ব
পরিচ্ছেদঃ ১. জনগণ কুরায়শদের অনুগামী এবং খিলাফত কুরায়শদের মধ্যে সীমিত
৪৫৯৭-(৩/১৮১৯) ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব হারিসী (রহঃ) ….. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লোকজন ভাল-মন্দ উভয় ব্যাপারেই কুরায়শদের অনুসারী। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৫৫২, ইসলামিক সেন্টার ৪৫৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮২/ আহকাম
পরিচ্ছেদঃ ৩০০৬. আমীর কুরাইশদের থেকে হবে
৬৬৫৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, তারা কুরাইশের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট ছিলেন। তখন মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট সংবাদ পৌছল যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, অচিরেই কাহতান গোত্র থেকে একজন বাদশাহ হবেন। এ শুনে তিনি ক্ষুদ্ধ হলেন এবং দাঁড়ালেন। এরপর তিনি আল্লাহ তা’আলার যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন, তারপর তিনি বললেন, যা হোক! আমার নিকট এ মর্মে সংবাদ পৌছেছে যে, তোমাদের কতিপয় ব্যাক্তি এরূপ কথা বলে থাকে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বর্ণিত নেই। এরাই তোমাদের মাঝে সবচেয়ে অজ্ঞ। সুতরাং তোমরা এ সকল মনগড়া কথা থেকে যা স্বয়ং বক্তাকেই পথভ্রষ্ট করে সতর্ক থাক। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, (খিলাফতের) এ বিষয়টি কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তারা দ্বীনের উপর কায়েম থাকবে। যে কেউ তাদের সঙ্গে বিরোধিতা করে তবে আল্লাহ তা’আলা তাকেই অধোমুখে নিপতিত করবেন। নুআয়ম (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) সুত্রে শুআয়ব এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জুবায়র ইবনু মুত‘ইম (রাঃ)


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮২/ আহকাম
পরিচ্ছেদঃ ৩০০৬. আমীর কুরাইশদের থেকে হবে
৬৬৫৫। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (খিলাফতের) এই বিষয়টি সর্বদাই কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তাদের থেকে দু’জন লোকও অবশিষ্ট থাকবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ)


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮২/ আহকাম
পরিচ্ছেদঃ ৩০০৮. ইমামের আনুগত্য ও মান্যতা, যতক্ষন তা নাফরমানীর কাজ না হয়
৬৬৫৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ তার আমীর (ক্ষমতাসীন) থেকে এমন কিছু দেখে, যা সে অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে কেউ জামাআত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দুরে সরে মরবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলিয়াতের মৃত্যু।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)


ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ
ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ

আপনি জানলে আশ্চর্য হবেন যে, ইসলামে শহরের মানুষ এবং গ্রামের মানুষের মধ্যে পর্থক্য করে 😁😁😁 এই বিষয়টিও ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ এর মধ্যেই

ইসলামে গ্রামের মানুষ এবং শহরের মানুষের মধ্যে পার্থক্য:

সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৮/ বিচার
পরিচ্ছেদঃ ৪০১. শহরবাসীদের উপর গ্রামবাসীদের সাক্ষ্যদান।
৩৫৬৩. আহমদ ইবন সাঈদ (রহঃ) ….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এরূপ বর্ণনা করতে শোনেন যে, শহরবাসীদের উপর গ্রামবাসীদের সাক্ষ্য দেওয়া বৈধ নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)


আপনি নিজের রাগ মেটাতে কোন গোত্রের উপর ঢালাওভাবে অভিশাপ দিতে পারেন না, এতে আপনার নিচু এবং হিংস্র মনোভাব ব্যক্ত করে।কারণ একটি গোত্রে অনেক ধরনের মানুষের বসবাস করে যেমন: শিশু, বৃদ্ধ, নারী। কিন্তু নবী মোহাম্মদ এটাই করতেন।

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৫/ বৃষ্টির জন্য দু’আ
পরিচ্ছেদঃ ৬৩৬. নবী (ﷺ) এর দু’আ ইউসুফ (আঃ) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরেও) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন।
৯৫২। কুতাইবা ইবনু সায়ীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শেষ রাকাআত থেকে মাথা উঠালেন, তখন বললেন, হে আল্লাহ! আইয়্যাশ ইবনু আবূ রাবী’আহকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! সালামা ইবনু হিশামকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে রক্ষা করুণ। হে আল্লাহ! দুর্বল মু’মিনদেরকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর আপনার শাস্তি কঠোর করে দিন। হে আল্লাহ! ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর ন্যায় (এদের উপর) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বললেন, গিফার গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করুন। আর আসলাম গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে নিরাপদে রাখুন। ইবনু আবূ যিনাদ (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বলেন, এ সমস্ত দু’আ ফজরের সালাতে ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৫/ বৃষ্টির জন্য দু’আ
পরিচ্ছেদঃ ৬৩৬. নবী (ﷺ) এর দু’আ ইউসুফ (আঃ) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরেও) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন।
৯৫৩। হুমাইদী ও উসমান ইবনু আবূ শাইবা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন লোকদেরকে ইসলাম বিমুখ ভুমিকায় দেখলেন, তখন দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর যামানার সাত বছরের (দুর্ভিক্ষের) ন্যায় তাঁদের উপর সাতটি বছর দুর্ভিক্ষ দিন। ফলে তাঁদের উপর এমন দুর্ভিক্ষ আপতিত হল যে, তা সব কিছুই ধ্বংস করে দিল। এমনকি মানুষ তখন চামড়া, মৃতদেহ এবং পচা ও গলিত জানোয়ারও খেতে লাগলো। ক্ষুদার তাড়নায় অবস্থা এতদূর চরম আকার ধারণ করল যে, কেউ যখন আকাশের দিকে তাকাত তখন সে ধুঁয়া দেখতে পেত। এমতাবস্থায় আবূ সুফিয়ান (ইসলাম গ্রহনের পূর্বে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মদ! তুমি তো আল্লাহর আদেশ মেনে চল এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখার আদেশ দান কর। কিন্তু তোমার কওমের লোকেরা তো মরে যাচ্ছে। তুমি তাঁদের জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ কর। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’লা বলেছেনঃ
‏فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ‏‏ إِلَى قَوْلِهِ ‏‏عَائِدُونَ * يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرَى
আপনি সে দিনটির অপেক্ষায় থাকুন যখন আকাশ সুস্পষ্ট ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে সেদিন আমি প্রবলভাবে তোমাদের পাকড়াও করব”। (৪৪ঃ ১০-১৬)
আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, সে কঠিন আঘাত এর দিন ছিল বদরের যুদ্ধের দিন। ধুঁয়াও দেখা গেছে, আঘাতও এসেছে। আর মক্কার মুশরিকদের নিহত ও গ্রেফতারের যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, তাও সত্য হয়েছে। সত্য হয়েছে সুরা রুম-এর এ আয়াতও (রুমবাসী দশ বছরের মধ্যে পারসিকদের উপর আবার বিজয় লাভ করবে)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ‌ ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ)


কি ভাবছেন? ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ কেনো? এতো কেবল শুরু! এবার আপনাদের আরও ভয়ংকর কিছু সহীহ হাদিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো,

কবার ভেবে দেখুন ত আপনার ইসলাম অমুসলিমদের বিনাকারণে রাস্তার পাশে ঠেলে দিতে বলছে!

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৪০। সালাম
পরিচ্ছেদঃ ৪. আহলে কিতাব (ইয়াহুদী-নাসারা)-কে আগে সালাম করার নিষিদ্ধকরণ এবং তাদের সালামের উত্তর দেয়ার বিবরণ
৫৫৫৪-(১৩/২১৬৭) কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ….. আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াহুদী ও নাসারাদের আগে বাড়িয়ে সালাম করো না এবং তাদের কাউকে রাস্তায় দেখলে তাকে রাস্তার পাশে চলতে বাধ্য করো। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৪৭৬, ইসলামিক সেন্টার ৫৪৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)


সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
অধ্যায়ঃ ১৯/ যুদ্ধাভিযান
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী
‏পরিচ্ছদঃ ৪১. আহলে কিতাবদের সালাম প্রদান প্রসঙ্গে
১৬০২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ইয়াহুদী-নাসারাদের প্রথমে সালাম প্রদান করো না। তোমরা রাস্তায় চলাচলের সময় তাদের কারো সাথে দেখা হলে তাকে রাস্তার কিনারায় ঠেলে দিও।
সহীহ, সহীহা (৭০৪), ইরওয়া (১২৭১), মুসলিম, বুখারী আদাবুল মুফরাদ, ২৮৫৫ নং হাদীসটির আলোচনা আসবে।
ইবনু উমার, আনাস ও আবূ বাসরা আল-গিফারী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)


এবার যা বলতে যাচ্ছি তা আরও ভয়ংকর, আপনি যদি একজন মুসলিম হোন তাহলে যেনে রাখুন আপনার ইসলাম কোন অমুসলিমকে খাবার দিতে নিরুৎসাহিত করে। যা ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ কেই সামনে আনে। অথচ এই ধরনের কাজ শুধুমাত্র একটা অমানুষ-ই করতে পারে। আপনি যদি একজন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে বিবেচনা আপনার উপর ছেড়ে দিলাম।

অমুসলিমদের খাবার দেওয়া প্রসঙ্গে:

মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা
৫০১৮-(১৬) আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, মু’মিন ব্যতীত অন্য কাউকে বন্ধু বানাবে না এবং তোমার খাদ্য আল্লাহভীরু লোক ছাড়া যেন অন্য কেউ না খায়। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও দারিমী)(1)
(1) হাসান : তিরমিযী ২৩৯৫, আবূ দাঊদ ৪৮৩২, সহীহুল জামি‘ ৭৩৪১, সহীহ আত্ তারগীব ৩০৩৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৫৪, আহমাদ ১১৩৩৭, আবূ ইয়া‘লা ১৩১৫, দারিমী ২০৫৭, শু‘আবুল ঈমান ৯৩৮২, হিলইয়াতুল আওলিয়া ৭/৭৪, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৩১৩৬, আল মুসতাদরাক ৭১৬৯।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)


সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৬/ শিষ্টাচার
১৯. যার সংস্পর্শে বসা উচিত
৪৮৩২। আবূ সাঈদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি মু‘মিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেযগার লোকে খায়।(1)
হাসান।
(1). তিরমিযী, আহমাদ।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)


শুধু তাই নয়! আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে অমুসলিমদের সাথে আপনার বসবাস করাও নিষেধ! এটিও ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ সামনে নিয়ে আসে।

অমুসলিমদের সাথে বসবাস নিষিদ্ধ ইসলামে:

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৯/ জিহাদ
১৮২. মুশরিকদের এলাকায় অবস্থান সম্পর্কে
২৭৮৭। সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কেউ কোনো মুশরিকের সাহচর্যে থাকলে এবং তাদের সাথে বসবাস করলে সে তাদেরই মতো।(1)
(1). সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)


নবী মোহাম্মদের ইহুদীবিদ্বেষ:

নবী মোহাম্মদ মৃত্যুর আগেও চরম অন্যধর্ম বিদ্বেষী ছিলেন! এটাও কি ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ এর পক্ষে প্রমাণ নয়?

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৯১৭. প্রতিনিধি দলকে উপঢৌকন প্রদান
১৯১৬. পরিচ্ছেদঃ জিম্মিদের জন্য সুপারিশ করা যাবে কি এবং তাদের সাথে আচার-আচরণ
২৮৩৮। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি (কোন এক সময়) বললেন, বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! এরপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর আশ্রুতে (যমিনের) কঙ্করগুলো সিক্ত হয়ে গেল। আর তিনি বলতে লাগলেন, বৃহস্পতিবারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগ যাতনা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, তোমার আমার জন্য লিখার কোন জিনিস নিয়ে আস, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখিয়ে দিব। যাতে এরপর তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হয। এতে সাহাবীগণ পরস্পর মতপার্থক্য করেন। অথচ নাবীর সম্মুখে মতপার্থক্য সমীচীন নয়। তাদের কেউ কেউ বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া ত্যাগ করেছেন?’
তিনি বললেন, ‘আচ্ছা’ আমাকে আমার অবস্থায় থাকতে দাও। তোমরা আমাকে যে অবস্থার দিকে আহবান করছো তার চেয়ে আমি যে অবস্থায় আছি তা উত্তম। ’ অবশেষে তিনি ইন্তেকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। (১) মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত কর, (২) প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও আনুরূপ দিও (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ও ইয়াকুব (রহঃ) বলেন, আমি মুগীরা ইবনু আবদুর রাহমানকে জাযীরাতুল আরব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, তাহল মক্কা, মদিনা ইয়ামামা ও ইয়ামান। ইয়াকূব (রহঃ) বলেন, ‘তিহামা আরম্ভ হল ‘আরজ থেকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)


উপসংহার:

এতক্ষণ আমরা যা আলোচনা করলাম এতে করে ইসলামে ভয়ংকর জাতিভেদ ও বর্ণবাদ নিশ্চিতভাবে ফুটে উঠেছে, প্রত্যেকটি দাবিকে রেফারেন্সের সহিত লিখার চেষ্টা করেছি, তবুও যদি আপনার কোন ধরনের সন্দেহ থাকে তাহলে আপনি আপনার মন্তব্য রাখতে পারে নির্দ্বিধায়। তবে, আমাদের সকলেরই উচিত এই ধরনের অমানুষিক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা এবং সমাজে এই ধরনের চিন্তাধারা প্রচার এবং প্রসার ঘটানো থেকে বিরত থাকা। নয়তো একটি সমাজ পিছিয়ে থাকতে এবং সমাজে অশান্তি বেড়ে যেতে এই ধরনের কুসংস্কার মুখ্য ভুমিকা রাখে।


এই বিষয়ে আপনি আরও বিস্তারিত পড়তে পারেন : ইসলাম এবং জাতিভেদ বা বর্ণবাদ

আমার লেখা আরও একটি ব্লগ পড়তে পারেন: ঈশ্বরের প্রতি মানুষের বিশ্বাস হারানোর কারণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *