মনিষীদের জীবনী

খালেদা জিয়া-বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর জীবনকাহিনী

খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতির এক অসাধারণ নাম। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রাজনৈতিক জীবন, ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং অর্জন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই জীবনীতে আমরা খালেদা জিয়ার জীবনের প্রতিটি দিক নিয়ে আলোচনা করব।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসে জন্মগ্রহণ করেন, যদিও তার জন্মতারিখ নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। তিনি জন্মগ্রহণ করেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির জলপাইগুড়িতে (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ)। তার পৈতৃক বাড়ি ফেনীর ফুলগাজীতে। তিনি ছিলেন চা ব্যবসায়ী ইস্কান্দার আলী মজুমদার এবং তাইয়াবা মজুমদারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তার শৈশব কেটেছে দিনাজপুরে, যেখানে তিনি দিনাজপুর মিশন স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৬০ সালে তিনি সরকারি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পরে দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভর্তি হন। তবে, ১৯৬৫ সালে তিনি তার স্বামীর সাথে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান, ফলে তার পড়াশোনা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

বিবাহ ও পারিবারিক জীবন

১৯৫৯ সালে, মাত্র ১৪ বছর বয়সে, খালেদা জিয়া তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার জিয়াউর রহমানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জিয়াউর রহমান পরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর এবং ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দম্পতির দুই পুত্র—তারেক রহমান (জন্ম ১৯৬৭) এবং আরাফাত রহমান কোকো (জন্ম ১৯৬৯)। তারেক রহমান বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, এবং আরাফাত রহমান ২০১৫ সালে হৃদরোগে মারা যান। খালেদার বোন খুরশীদ জাহান (১৯৩৯–২০০৬) ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, এবং তার ভাই সাইদ ইস্কান্দার (১৯৫৩–২০১২) ফেনী-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন।

রাজনীতিতে প্রবেশ

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় তার স্বামী জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর। ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান একটি সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। এই ঘটনা খালেদাকে রাজনীতিতে প্রবেশের জন্য প্রণোদিত করে। ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি তিনি বিএনপিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৩ সালের মার্চে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন হন, যে দলটি তার স্বামী ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম

১৯৮২ সালে সেনাপ্রধান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিএনপি সরকার উৎখাত হয়। এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া একটি অফরোধযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ‘৭-দলীয় জোট’ গঠন করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৮৬ সালে এরশাদ নির্বাচন ঘোষণা করলেও খালেদা এটিকে অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন প্রতিরোধের আহ্বান জানান। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তাকে একাধিকবার গৃহবন্দী করা হয়। অবশেষে, ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণ-আন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করেন, এবং খালেদার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব

১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার শাসনামলে তিনি শিক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেন, যার মধ্যে রয়েছে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা, মেয়েদের জন্য দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা, এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি। তিনি অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বেসরকারি খাতের প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে, তার শাসনকালে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়।

আইনি চ্যালেঞ্জ ও কারাবাস

২০০৬ সালে তার সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, ২০০৭ সালে খালেদা জিয়া এবং তার দুই পুত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। ২০১৮ সালে তিনি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। তার সমর্থকরা এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে। ২০১৯ সালে তিনি অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে স্থানান্তরিত হন এবং ২০২০ সালের মার্চে মানবিক কারণে গৃহবন্দী অবস্থায় মুক্তি পান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের নির্দেশে তিনি গৃহবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পান। ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি দুর্নীতির মামলায় খালাস পান।

সাম্প্রতিক ঘটনাবলী

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ এবং কিডনি সমস্যার জন্য চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান। তার স্বাস্থ্য এখনও উদ্বেগের বিষয়, এবং তিনি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকতে পারেননি। তবে, তার মুক্তি এবং দুর্নীতির মামলায় খালাস বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা এনেছে।

খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা

খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশের রাজনীতির একটি কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য। এই দুই নেত্রী, যিনি দুজনেই প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কদের স্ত্রী, প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছেন। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায়শই ‘ব্যাটল অব দ্য বেগমস’ নামে পরিচিত। যদিও তারা ১৯৯০ সালে এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে একসাথে কাজ করেছিলেন, তবে পরবর্তীতে তাদের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে, যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলে।

অর্জন ও উত্তরাধিকার

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের একটি মাইলফলক। তিনি শিক্ষা, অবকাঠামো, এবং বেসরকারি খাতে সংস্কারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। ২০০৪, ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় স্থান দেয়। ২০১১ সালে নিউ জার্সির স্টেট সিনেট তাকে “গণতন্ত্রের জন্য যোদ্ধা” হিসেবে সম্মানিত করে। তিনি পাঁচটি ভিন্ন সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিরল কৃতিত্ব।

খালেদা জিয়ার জীবনের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতির একটি প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, যিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তার জীবন ব্যক্তিগত ত্যাগ, রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং অসাধারণ অর্জনের গল্পে ভরা। নিচে তার জীবনের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা গল্প উপস্থাপন করা হলো, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে তার ভূমিকাকে তুলে ধরে।

১. জন্ম ও শৈশব

খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের আগস্টে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ফেনীর ফুলগাজীতে। তিনি চা ব্যবসায়ী ইস্কান্দার আলী মজুমদার ও তাইয়াবা মজুমদারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তার শৈশব কেটেছে দিনাজপুরে, যেখানে তিনি একটি সাধারণ পরিবেশে বড় হন।

২. প্রাথমিক শিক্ষা

তিনি দিনাজপুর মিশন স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৯৬০ সালে সরকারি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভর্তি হন, তবে তার শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

৩. জিয়াউর রহমানের সাথে বিবাহ

১৯৫৯ সালে, মাত্র ১৪ বছর বয়সে, খালেদা জিয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার জিয়াউর রহমানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই বিবাহ তার জীবনের একটি টার্নিং পয়েন্ট ছিল, যা পরবর্তীতে তাকে রাজনীতির দিকে নিয়ে যায়।

৪. স্বামীর সাথে পশ্চিম পাকিস্তানে যাত্রা

১৯৬৫ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক দায়িত্বের কারণে খালেদা তার স্বামীর সাথে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। এই সময় তিনি গৃহিণী হিসেবে পারিবারিক জীবনের দিকে মনোনিবেশ করেন।

৫. পুত্রদের জন্ম

খালেদা ও জিয়াউর রহমানের দুই পুত্র—তারেক রহমান (১৯৬৭) এবং আরাফাত রহমান কোকো (১৯৬৯)—জন্মগ্রহণ করেন। তারেক বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, এবং আরাফাত ২০১৫ সালে মারা যান।

৬. জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড

১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান একটি সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। এই ঘটনা খালেদা জিয়ার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে এবং তাকে রাজনীতিতে প্রবেশে প্রণোদিত করে।

৭. বিএনপিতে যোগদান

১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি খালেদা জিয়া বিএনপিতে যোগ দেন। তার স্বামী ১৯৭৮ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটি তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু ছিল।

৮. বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচন

১৯৮৩ সালের মার্চে তিনি বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, যা তার নেতৃত্বের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।

৯. বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে নির্বাচন

১৯৮৪ সালের ১০ মে খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। এই দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে তিনি দলটির প্রধান নেতৃত্বে আসেন।

১০. এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন

১৯৮২ সালে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক অভ্যুত্থানের পর খালেদা জিয়া ‘৭-দলীয় জোট’ গঠন করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। তিনি এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করেন।

১১. গৃহবন্দী অবস্থা

১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে খালেদা জিয়াকে একাধিকবার গৃহবন্দী করা হয়। তবুও তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যান।

১২. এরশাদের পতন

১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে খালেদার নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করেন। এটি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি মাইলফলক ছিল।

১৩. প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী

১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এটি ছিল দেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

১৪. শিক্ষা সংস্কার

তার প্রথম মেয়াদে (১৯৯১–১৯৯৬) খালেদা জিয়া শিক্ষা খাতে বড় সংস্কার আনেন। তিনি বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা, মেয়েদের জন্য দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রবর্তন করেন।

১৫. ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা

১৯৯১ সালে বাংলাদেশে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, যা প্রায় ১৪০,০০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটায়। খালেদা জিয়ার সরকার এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে।

১৬. দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির জয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার এই মেয়াদ ২০০৬ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

১৭. দুর্নীতির অভিযোগ ও কারাবাস

২০০৭ সালে খালেদা জিয়া ও তার পুত্রদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। ২০১৮ সালে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় তিনি ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। তার সমর্থকরা এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে অভিহিত করে।

১৮. স্বাস্থ্যগত কারণে মুক্তি

২০১৯ সালে অসুস্থতার কারণে তিনি হাসপাতালে স্থানান্তরিত হন এবং ২০২০ সালের মার্চে মানবিক কারণে গৃহবন্দী অবস্থায় মুক্তি পান।

১৯. ২০২৪ সালে গৃহবন্দী থেকে মুক্তি

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়া গৃহবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পান। ২৭ নভেম্বর তিনি দুর্নীতির মামলায় খালাস পান।

২০. লন্ডনে চিকিৎসা

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, ৭৯ বছর বয়সে, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ এবং কিডনি সমস্যার জন্য চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান। এটি তার স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জের সর্বশেষ অধ্যায়।

তথ্যসূত্র

উপসংহার

খালেদা জিয়ার জীবনী একজন নারীর সাহস, দৃঢ়তা এবং নেতৃত্বের গল্প। তার ব্যক্তিগত ক্ষতি এবং রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখেছেন। তার উত্তরাধিকার বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে থাকবে।

তথ্যসূত্র

you can also read kazi nazrul islam

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *